ইন্টারনেটে সহজে বাংলা লেখা

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৭ সময়ঃ ৪:২৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:২৫ অপরাহ্ণ

avro old 2স্বাধীনতাকে শেকলবন্দী করা যায় না, মরিয়া মানুষ সেটাকে যেভাবেই হোক ছিনিয়ে আনে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পশ্চিম পাকিস্তানিরা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। কিন্তু বাংলা ছিল পাকিস্তানের অধিকাংশ মানুষের ভাষা। নিজের মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের জন্য মরিয়া বাঙালি যুবক সালাম, বরকত, রফিকেরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয় ১৯৭১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানি শাসকেরা বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটলে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হয় বাংলা।

একুশ শতকের শুরুর দিকেও ইন্টারনেটে বাংলা লেখার তেমন কোন সফটওয়্যার ছিল না। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্র মেহেদি হাসান খান ইন্টারনেটে সহজে বাংলা লেখার জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরিতে হাত দেন। মেহেদী তার প্রথম বাংলা ফন্ট ইউনিবিজয় ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক ও ভিজ্যুয়াল বেসিকএঁর উপর লেখেন। পরে তিনি অভ্র কী-বোর্ড ব্যবহারকারীদের সুবিধার্তে ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়াই লেখেন। অভ্র সম্পূর্ণভাবে ইউনিকোড উপযোগী, যা ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম দ্বারা ২০০৩ সালের ১৪ জুন স্বীকৃত হয়। তখন তিনি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ওমিক্রনল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন। অভ্র কী-বোর্ড প্রথম উন্মুক্ত করা হয় ২০০৩ সালে ২৬ মার্চ। ওমিক্রনল্যাব থেকে অভ্র উন্মুক্ত করা হয় ২০০৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে ইন্টারনেটে বাংলা লেখার জন্য অভ্রই সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি। 

মেহেদি পরবর্তীতে অভ্রকে ভিজ্যুয়াল বেসিক থেকে  ডেলফিতে ভাষান্তর করেন। এই সফটওয়্যারটির লিনাক্স সংস্করণ লেখা হয়েছে সি++ প্রোগ্রামিং ভাষায়। এক সময়ে রিফাত-উন-নবী, তানবিন ইসলাম সিয়াম, রাইয়ান কামাল, শাবাব মুস্তফা এবং নিপুন হক এই সফটওয়্যারের উন্নয়নের সাথে যুক্ত হন। ২০০৭ সালে ‘অভ্র কীবোর্ড পোর্টেবল এডিশন’ বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্যে উন্মুক্ত করা হয়। সফটওয়্যারটির আগের সংস্করণের লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম সমর্থিত সোর্সকোড আগে থেকেই মুক্ত ছিল এবং ২০১০ সালে উইন্ডোজে অভ্র কীবোর্ডের ৫ ভার্সনের সাথে এর সোর্স কোড মোজিলা পাবলিক লাইসেন্স এর আওতায় উন্মুক্ত করা হয়।

অভ্রতে সাম্প্রতিকতম সংস্করণে ফোনেটিক ছাড়াও প্রভাত, মুনির অপটিমা, অভ্র ইজি, বর্ননা এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল প্রকাশিত  জাতীয় লেআউটে বাংলা লেখা যায়। মাইক্রোসফটের অনলাইন সংগ্রহশালায় ইন্ডিক ভাষাসমূহের সমাধানের তালিকায় অভ্র কী-বোর্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অভ্র ব্যবহার করছে। ইন্টারনেটে বাংলা ভাষা ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে অভ্র কিবোর্ডের অবদান অনস্বীকার্য। অভ্র কিবোর্ড বিনামূল্যে ডাউনলোড ও ব্যবহার করা যায়।

প্রতিক্ষণ/এডি/নাজমুল

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G